চুরির হদ্দ কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। যথোপযুক্ত সাক্ষ্য প্রামাণের দ্বারা যদি চুরির অপরাধ প্রমাণিত হয়ে যায়, তাহলে চোরকে দু’ধরনের শাস্তি ভোগ

করতে হবে:

১. তার হাতের কজা পর্যন্ত হস্ত কর্তন করা হবে।

২. চুরিকৃত মাল অথবা এর মূল্য ফেরত দিতে হবে।

সাক্ষ্য প্রমাণের দ্বারা যখন চুরির অপরাধ প্রমাণিত হয়ে যাবে, তখন চোরের উপর কেবল হস্ত কর্তনের দণ্ড কার্যকর হবে, একই সাথে অর্থ দণ্ড দেওয়া হবে না। অর্থাৎ চোরকে এই দুই প্রকার শাস্তি দেওয়া যাবে না। চুরিকৃত মাল যদি নষ্ট হয়ে যায় কিংবা নষ্ট করে ফেলা হয়, তাহলে চোরকে এই মালের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। সুতরাং চোর যদি চুরিকৃত মালের ক্ষতিপূরণ ও জরিমানা আদায় করে তাহলে আর হস্ত কর্তন করা হবে না। আর যদি তার হস্ত কর্তন করা হয়, তাহলে তাকে পণ্যের আর জরিমানা দিতে হবে না। চুরির শাস্তি স্বারূপ যদি চোরের হাতকাটা হয় এবং চুরিকৃত মাল তার নিকট বিদ্যমান থাকে, তাহলে এই মাল অবশ্যই এর মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। কেননা চুরিকৃত এই মাল এখনো তার মালিকের মালিকানা ভুক্তই রয়েছে। এ

১. দশ দিরহাম ২ তোলা ৭, মাশা

২. ১ মাশা = ৮ রতি

৩. ১ তোলা = ১২ মাশা।

৪. ৮ রতি = ১ মাশা

৫. ১২ মাশা = ১ তোলা ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। বস্তুত যার মাল চুরি করা হয়েছে তার এক্ষেত্রে পূর্ণ ইখতিয়ার রয়েছে, হয়তো সে চোরের নিকট থেকে চুরিকৃত মালের জরিমানা আদায় করবে কিংবা তার হস্ত কর্তন করাবে। যদি জরিমানা আদায় করে তাহলে আর তার হস্ত কর্তন করাতে পারবে না। আর যদি তার হস্ত কর্তন করা হয় তাহলে তার নিকট থেকে জরিমানা আদায় করা যাবে না।

চুরি করার কারণে শরয়ী দণ্ড হিসেবে কুরআন মজীদে শুধুমাত্র হস্ত কর্তনের শাস্তির কথাই উল্লেখ রয়েছে। মহান আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন:

والسارق والسَّارِقَةُ فَقَطَعُوا أَيْدِيَهُمَا جَزَاءًا بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

পুরুষ চোর এবং নারী চোর, তাদের হাত কেটে দাও এটা তাদের কৃতকর্মের ফল। এবং আল্লাহর পক্ষ হতে আদর্শদণ্ড। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা মায়িদা: ৩৮)

উপরোক্ত আয়াত দারা একথাই প্রমাণিত হয় যে, চোর চুরি করার দ্বারা যে অপরাধ করেছে তার সবটুকু শাস্তিই হলো হস্ত কর্তন। অতএব, এই হস্ত কর্তনের সাথে আর অন্য কোন শাস্তিকে সংযুক্ত করা যাবে না। মিসওয়ার ইবন ইবরাহীম, আবদুর রহমান ইব্‌ন আওফ (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (সা) ইরশাদ করেন:

لا يغرم السارق إذا اقيم عليه الحد

চোরের উপর হস্ত কর্তনের হদ্দ কার্যকর হয়ে যাওয়ার পর তার থেকে আর কোন জরিমানা আদায় করা হবে না। (কিতাবুল ফিকহ আলাল মাযাহিবিল আরবা’আহ, ৫ম খণ্ড)।