অযু নামাযের জন্য অত্যাবশ্যক। অযু ছাড়া নামায হয় না। মানুষের যৌনশক্তি, স্নায়ু ও মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং শক্তির উপর নির্ভরশীল। দেহের যেসকল অংশে স্নায়ু শেষ হয়েছে তাই অধিক অনুভূতিশীল ও স্পর্শকাতর। যেমন- হাত, পায়ের শেষ ভাগ, মুখের মধ্যে জিহ্বা, ঠোঁট, নাক, চক্ষু এ সকল অঙ্গ ঠান্ডা পানি দ্বারা ধৌত করলে সতেজ সজীব হয়ে উঠে; সাথে সাথে স্নায়ুর অন্যান্য অংশ ও মস্তিষ্কে সতেজ ভাব সৃষ্টি করে শক্তিশালী করে তোলে। অযু শরীরে টনিকের কাজ করে। ভালভাবে অযু করার পর দেহ হালকা বোধ হয়, মনে আনন্দ উদ্যমের সৃষ্টি হয়। দেহের শেষ ভাগগুলো অনুভূতিশীল বলেই মানুষ জিহ্বা দ্বারা খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করে, ঠোঁট দ্বারা চুমো খায়, হাতের আঙ্গুল দ্বারা নারী দেহের স্পর্শে সুখ অনুভব করে, চক্ষু দ্বারা সুন্দর দৃশ্য দেখে আনন্দিত হয়। নাক দ্বারা সুগন্ধ উপভোগ করে। যারা প্রত্যেক নামাযের পূর্বে অযু করে তাদের কামশক্তি দীর্ঘস্থায়ী ও সবল হয়। বোধ হয়, এজন্যই ইসলামী শরীয়তে স্ত্রীসঙ্গমের আগে অযু করে লওয়া উত্তম বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে। দেখা গেছে, এতে স্নায়ু সবল হয়ে মস্তিষ্কের কামকেন্দ্রকে উদ্দীপ্ত করে বহুক্ষণ পর্যন্ত সঙ্গম ক্রিয়ায় নিযুক্ত রাখতে সক্ষম হয়। যে কেউ পরীক্ষা করলে এটা অবশ্যই উপলব্ধি করতে পারবেন যে, নামায ও অযুর দ্বারা মস্তিষ্ক সতেজ হয়, ক্লান্তি দূর হয়, দেহের বর্ধিত তাপ সরে যায়, স্নায়ু ও চুলের গোড়া সবল হয়। পা ধৌত করলে দেহে রক্ত চলাচল সহজ হয়ে হৃৎপিণ্ডের শক্তি বৃদ্ধি পায়। সেজন্য নামাযী ব্যক্তিগণ সাধারণতঃ হৃদরোগ, রক্তের উচ্চ চাপজনিত রোগ ও বহুমূত্র রোগে কম আক্রান্ত হয়। অনেক দিন যাবত যথাসময়ে নামায আদায় শৃঙ্খলার সাথে সাংসারিক কাজ করার অভ্যাস গঠন ও চিন্তা-ভাবনা হালকা করে। বে-নামাযী আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হতে পারে না। আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতা বহু মানসিক রোগ প্রতিরোধ করে ও কামশক্তির প্রধান শত্রু দুর্ভাবনা কমিয়ে ফেলে। জামাআতের সাথে নামায পড়লে সাহস বৃদ্ধি পায়। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, জামাআতে নামায পড়লে সাতাশ গুণ সওয়াব বেশী পাওয়া যায়।