আল্লাহ তাআলা একাধিক বার কোরআনে অঙ্গীকার করেছেন, আমি প্রত্যেক নেক কাজের জন্য দশ হতে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত পুরস্কার দান করব। সময় মানুষের অমূল্য সম্পদ। মানব জীবন সময়েরই সমষ্টি। প্রতি দিন নামাযে যে সময় ব্যয় হয়, উক্ত অঙ্গীকার মূলে নামাযী মানুষ এ সময়ের জন্য কর্তব্যের নিয়মে অন্ততঃ দশ গুণ সময় নিজের আয়ুর সাথে যোগ পাওয়ার অধিকারী হয়। এ নিয়মে আয়ু বেড়ে থাকে। আল্লাহ কারও নিকট কোন বিষয়ে ঋণী থাকতে পারেন না। কেননা, তাঁর এক নাম ‘নাফিউ’ অর্থাৎ সুফলদাতা। আবার নামাযে যে সময় ব্যয় হয় তার আর্থিক পূরণ হিসাবে আল্লাহ তাআলা নামাযীর রিযিক বৃদ্ধি ও স্থিতিশীল করে দেন। নামাযীর জীবনে এমন কখনও হয় না যে, একদিন প্রচুর খাদ্য পেল আর পরে উপবাস করতে হল। আয়ু বৃদ্ধির সাথে রিযিকের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তা খুলে বলার প্রয়োজন হয় না।

নামায মানুষের যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে এবং যৌনশক্তির সাথে আয়ুর একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আধুনিক যুগের বৈজ্ঞানিকগণও এটা স্বীকার করেছেন। মানব দেহে সর্বদা দু’টি বিরুদ্ধ শক্তি বিরাজ করে। একটি দেহকে রক্ষা আর অন্যটি সর্বদাই বিনাশ করার চেষ্টা করে। দেহে আঘাত পেলে যে ব্যথা পাওয়া যায়, এটা ধ্বংসকরী শক্তিরই কর্ম। সঙ্গমশক্তি এই ধ্বংসকরী শক্তি দুর্বল করে রাখার ক্ষমতা রাখে, এটাই সঙ্গম শক্তিসম্পন্ন মানুষের দীর্ঘায়ু লাভ করার প্রধান কারণ। যারা পরকাল ও পরকালে নেক-বদের বিচার সম্পর্কে সন্দিহান তারাই নামাযের প্রতি উদাসীন হয়ে থাকে। তাদের সম্পর্কে হযরত আলী (রাঃ)-এর একটি উপদেশমূলক ঘটনা বর্ণিত রয়েছে। একদা হযরত আলী (রাঃ) কোন এক অবিশ্বাসীর সাথে তর্কচ্ছলে বলেছিলেন, তুমি বলছ পরকাল বলে কিছু নেই, যদি তা সত্য হয় তবে তুমিও বাঁচবে আমিও বাঁচব। কিন্তু যদি তা না হয়ে আমি যে বলছি, পরকাল আছে এবং পরকালে নেক-বদের বিচারও আছে, তা যদি সত্য হয়, তাহলে আমি বেঁচে যাব, কিন্তু তুমি বাঁচতে পারবে না। পরকালের হিসাব-নিকাশ আর বিচারের প্রতি অবিশ্বাসীদের বুদ্ধিমানের ন্যায় এ ঘটনা হতে উপদেশ গ্রহণ করে সতর্ক হওয়া উচিত।