যখন চারজন সাক্ষী কোন ব্যক্তির যিনার ব্যাপারে একই মজলিসে সাক্ষ্য প্রদান করবে তখন বিচারক তাদেরকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তিনি তাদেরকে প্রথমে জিজ্ঞাসা করবেন যে, যিনা কি এবং তা কোথায় হয়েছে? উত্তরে তারা যখন যিনার বাস্তব চিত্র তুলে ধরে বলবে যে, আমরা অপরাধীকে তার যৌনাঙ্গ সুরমাদানীতে সুরমা শলাকা যেভাবে প্রবিষ্ট করানো হয় সেভাবে প্রবিষ্ট করতে দেখেছি। তখন বিচারক তাদেরকে যিনার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। উত্তরে সাক্ষীগণ যখণ যিনার অবস্থার বিবরণ পেশ করবে তখন বিচারক তাদেরকে যিনার সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। সাক্ষীগণ সময় সম্পর্কে বিবরণ পেশ করার পর বিচারক তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন যে, কার সাথে যিনা করেছে? এরপর তিনি তাদেরকে যিনা যে স্থানে সংঘটিত হয়েছে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা বরবেন। সাক্ষীগণ স্থানের বিবরণ পেশ করার পর বিচারক যদি তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হন, তাহলে তিনি অভিযুক্তকে তার ইহসান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। উত্তরে অভিযুক্ত যদি বলে যে, আমি মুহসিন অথবা অস্বীকৃতির পর সাক্ষীগণ তার মুহসিন হওয়া সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদান করে তখন বিচারক ইহসান কাকে বলে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। উত্তরে অভিযুক্ত নিজে অথবা ইহসানের যথার্থ বিবরণ পেশ করতে সক্ষম হলে বিচারক অভিযুক্তের ব্যাপারে রজমের নির্দেশ দিবেন। পক্ষান্তরে অভিযুক্ত যদি বলে যে, আমি মুহসিন নই এবং সাক্ষীগণ এ ব্যাপারে সাক্ষী প্রদান না করে তাহলে বিচারক বেত্রদণ্ডের নির্দেশ প্রদান করবেন। আর বিচারক যদি সাক্ষীগণের বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হন তাহলে সাক্ষীদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে আটকিয়ে রাখবেন।

চারজন সাক্ষী যিনা সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদানের পর বিচারক তাদেরকে যিনার অবস্থা ও যিনা কি ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। উত্তরে সাক্ষীগণ যদি বলে যে, আমরা যা যা দেখেছি এর চেয়ে আর কিছুই বলব না, তাহলে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না। তবে সাক্ষীদের সংখ্যা পূর্ণ হওয়ার কারণে তাদের উপর কাযাফের হদ্দ আরোপ করা যাবে না। (আলমগীরী, ২য় খণ্ড)

অনুরূপ কোন আকিল, বালিগ ব্যক্তি যদি চারটি পৃথক মজলিসে বিচারকের নিকট যিনার স্বীকারোক্তি প্রদান করে এবং বিচারক তার অবস্থার প্রতি লক্ষ্য করে নিশ্চিত হন যে, তার বুদ্ধি ঠিক আছে এবং সে এমন ব্যক্তি যার স্বীকারোক্তি গ্রহণযোগ্য, তখন তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করবেন যে, যিনা কী, যিনা কী অবস্থায় সংঘটিত হয়েছে, কার সাথে যিনা হয়েছে, কোথায় যিনা হয়েছে ও কখন যিনা করেছে? উত্তরে সে যখন তার বিবরণ পেশ করবে এবং তার বক্তব্য হতে প্রতিভাত হয়ে উঠবে যে, সে যিনা করেছে। তখন বিচারক তাকে ইহসান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। তখন সে যদি বলে যে, আমি মুহসিন। বিচারক ইহসান কাকে বলে জিজ্ঞাসা করবেন। সে ইহসানের বিবরণ পেশ করার পর বিচারক তার প্রতি রজমের নির্দেশ প্রদান করবেন। আর যদি সে বলে যে, আমি মুহসিন নই এবং সাক্ষীগণ তার মুহসিন হওয়া সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদান করে এবং তার দ্বারা তার মুহসিন হওয়া প্রমাণিত হয় তবে এ অবস্থায়ও বিচারক তার প্রতি রজমের নির্দেশ দিবেন। তবে বিচারকের পক্ষ হতে স্বীকারোক্তিকারীকে এভাবে বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়া মুস্তাহাব যে, সম্ভবত তুমি চুমো দিয়েছ, অথবা হাত দ্বারা স্পর্শ করেছ অথবা তুমি সন্দেহের বশে তার সাথে সঙ্গম করেছ-যিনা করোনি। (আলমগীরী, ২য় খণ্ড)