যিনার অপরাধী যদি অসুস্থ হয় এবং তার উপর রজমের নির্দেশ হয়ে থাকে তাহলে সুস্থতার অপেক্ষা না করে তাৎক্ষণিকভাবে তা কার্যকর করবে। আর বেত্রদণ্ডের নির্দেশ হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োগ না করে সুস্থতার অপেক্ষা করবে। কিন্তু যদি সুস্থতা এমন না হয় যে, তা ভালো হওয়ার কোন আশা নেই তাহলে দণ্ডাদেশের সাথে সাথেই তা কার্যকর করবে। নিফাস সম্পন্না মহিলার অবস্থা অসুস্থ ব্যক্তির মত। কাজেই এরূপ মহিলার উপর বেত্রদণ্ডের হদ্দ প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিফাস হতে মুক্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। হায়িয বিশিষ্টা মহিলাকে সুস্থ গণ্য করা হয়ে থাকে। তার উপর হদ্দ প্রয়োগের জন্য কোন কিছুর অপেক্ষা করতে হবে না।
অপরাধী যদি সন্তান সম্ভবা মহিলা হয়ে থাকে তাহলে বেত্রদণ্ড হোক অথবা রজম এ অবস্থায় তার উপর এর কোনটি প্রয়োগ করা যাবে না। তখন তার যিনা সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত হয়ে থাকলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত তাকে আটক রাখতে হবে। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর দেখতে হবে যে, সে মুহসিনা কি না। যদি মুহসিনা হয় এবং তার সন্তানের দুগ্ধপানের বয়স শেষ হয়ে যায়, অথবা কেউ এর দায়িত্ব গ্রহণ করে তাহলে তার উপর রজম কার্যকর করবে। আর মুহসিনা না হলে নিফাস হতে মুক্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে এবং তাহার হদ্দ কার্যকর করবে। কিন্তু এই দণ্ডাদেশ যদি তার নিজের স্বীকারোক্তির কারণে হয় তাহলে তাকে আটকে না রেখে বলবে যে, বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার পর ফিরে এসো। তারপর সে ফিরে এলে তার উপর রজম প্রয়োগ করা হবে, যদি কেউ শিশুর দায়িত্ব গ্রহণ করে। অন্যথায় শিশুর দুগ্ধ ছাড়ানো পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেয়া হবে। যিনার স্বীকারোক্তি প্রদানকারী সন্তান সম্ভবা মহিলা সন্তান ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত সময়ের অবকাশ পাওয়ার পর ফিরে আসতে যদি বিলম্ব করে এবং বলে যে, আমি সন্তান ভূমিষ্ট করিনি অথবা সাক্ষীগণ কোন মহিলার ব্যাপারে যিনার সাক্ষ্য প্রদান করার পর যদি মহিলা বলে যে, আমি সন্তান সম্ভবা তাহলে তার একথা গ্রহণযোগ্য হবে না। বরং বিচারক মহিলাদের দ্বারা তাকে যাচাই করবেন। মহিলাগণ যদি বলে যে, সে সন্তান সম্ভবা তাহলে বিচারক তাকে দুই বৎসর সময় দিবেন। এর মধ্যে সন্তান ভূমিষ্ট না হলেও বিচারক তার রজম কার্যকর করবেন। গোলামের মালিক গোলামের উপর বিচারকের নির্দেশ ব্যতীত শাস্তি দণ্ড কার্যকর করতে পারবে না। অনুরূপ প্রচণ্ড শীত অথবা প্রচণ্ড গরমের সময়ও হদ্দ কার্যকর করা যাবে না। (আলমগীরী, ২য় খণ্ড)