আল্লাহর সত্তাগত নামে কসম করলে কিংবা তাঁর গুণগত নাম তথা-রাহমান, রাহীম ইত্যাদি নাম যোগে কসম করলে কসম হবে। সমাজে প্রচলিত থাক বা না থাক গুণগত নাম সংযোগে কসম করলে কসম হয়ে যাবে। আল্লাহর কোন বিশেষণ যা দ্বারা কসম করার প্রচলন সমাজে বিদ্যমান, ঐ জাতীয় বিশেষণ যোগে কসম করলে কসম হয়ে যাবে। যেমন-আল্লাহ্র ইজ্জতের কসম, আল্লাহর জালালের কসম, আল্লাহর মহত্বের কসম, আমার প্রতিপালকের কসম, আরশের প্রতিপালকের কসম, ইত্যাদি। (আলমগীরী ২য় খণ্ড)
আল্লাহর মর্যাদার কসম, আল্লাহর রাজত্বের কসম, আল্লাহর কুদরতের কসম, আল্লাহর মহব্বতের কসম, আল্লাহর শক্তির কসম, আল্লাহর ইচ্ছার কসম, আল্লাহর প্রতিশ্রুতির কসম, আল্লাহর জিম্মাদারীর কসম, ইত্যাদি শব্দ উচ্চারণ করলেও কসম হবে। (আলমগীরী ২য় খণ্ড)
যদি কেউ বলে, “আমি যদি এ কাজ করি তবে আমি অগ্নিপূজক অপেক্ষা নিকৃষ্ট” তাহলে কসম হবে। “এ কাজ করলে আমি ইয়াহুদীর সমান, কাফিরের সমান” ইত্যাদি শব্দ দ্বারা কসম হবে। (আলমগীরী ২য় খণ্ড)
যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ভিন্ন অন্য কিছুর নামে কসম করে তার কসম হয় না। যেমন-যদি কেউ নবী করীম (সা)-এর নামে কসম করে, কিংবা কাবার কসম করে তবে, তা কসম হবে না। নবী করীম (সা)-এর সাথে সম্পর্ক চ্যুতির উল্লেখ থাকলে কসম হবে। অর্থাৎ যদি এমন বলে “যদি অমুক কাজ করি তবে, আমি, নবীর উম্মত নই”। তাহলে কসম হবে। কুরআনের কসম করলে কসম হবে। (আলমগীরী ২য় খণ্ড) যদি কেউ বলে, “এরূপ করলে আমি নবী (সা)-এর সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হবা তবে বিশুদ্ধ অভিমত হলো এতে কসম হবে না। যদি বলে, “এরূপ করলে আছি ডুবে শিশুর থেকে সম্পর্ক চ্যুত হয়ে যাব” কিংবা “কিবলা থেকে সম্পর্ক ছাত হয়ে যাদ তবেও কসম হবে।
যদি বলে, “আমি চার আসমানী কিতাব থেকে সম্পর্ক চ্যুত হয়ে যাব”। তবে কসম দিল বাণ এরূপ করলে আমি বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম থেকে সম্পর্ক ছারি কসম যাব” বললে কসম হবে। “এরূপ করলে আমি সকল ঈমানদারের সাথে সার চ্যুত হয়ে যাব” বললে কসম হবে।
যদি বলে আল্লাহর জানের কসম, আল্লাহর রহমতের কসম, আল্লাহর আযাদের কসম, আল্লাহর নারাজীর কসম, আল্লাহর গযবের কসম, আল্লাহর সন্তুষ্টির কসম আল্লাহর সাওয়াবের কসম, আল্লাহর ইবাদতের কসম, আল্লাহর দীনের কসম, অল্লাহর আনুগত্যের কসম আল্লাহর শরীয়তের কসম, আল্লাহর আরশের কসম, আল্লাহর দণ্ডবিধির কসম, বায়তুল্লাহর কসম, হাজরে আসওয়াদের কসম, মাশ’আরে হারামের কসম, সাফা ও মারওয়ার কসম, মিম্বরের কসম, রাওজার কসম, তাতে কসম হবে
না। যদি বলে, “আমি এরূপ করি তবে আমার উপর আল্লাহর লানত পড়বে’, কিংব আল্লাহর আযাব আসবে তাতে কসম হবে না। আকাশ মণ্ডল, পৃথিবী, চন্দ্র, সূর্য
তারকারাজির কসম করলে কসম হবে না।
হালালকে হারাম ঘোষণা করা কসমের পর্যায়ভুক্ত। কেউ তার মালিকানাধীম কোন কিছু হারাম ঘোষণা করলে তা হারাম হবে না। এরপর সেটি ব্যবহার কিংবা ভোগ করলে তার কসম ভঙ্গ হবে। অল্পভোগ করুক কিংবা বেশি, এর জন্য তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করতে হবে। কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীকে বলে, আপনি আমার জন্য হারাম অথবা এটি বলে যে, আমি আপনাকে আমার জন্য হারাম করে দিয়েছি। তাতে স্ত্রীর কসম হবে। এরপর স্ত্রীর সম্মতিতে কিংবা অসম্মতিতে স্বামী তার সাথে সহবাস করলে স্ত্রীর কফ্ফারা আদায় করতে হবে। প্রকাশ থাকে যে, যে সব বিষয় বা বস্তু চিরস্থায়ী হারাম অর্থাৎ যা কোন অবস্থাতেই হালাল হয় না, এগুলোকে শর্তযুক্তভাবে হালাল ঘোষণা করে প্রতিজ্ঞা করলে তা কসমের অন্তর্ভুক্ত হবে। যেমন কুফরী করা ও এ জাতীয় অন্যান্য বিষয়। আর যে গুলো হারাম বটে কিন্তু কোন কোন সময় বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে তা হালাল হয়ে যায়, সে গুলোকে শর্তযুক্তভাবে হালাল ঘোষণা করে প্রতিজ্ঞা করলে তা কসমের পর্যায়ভুক্ত হবে না। যেমন-মৃত প্রাণী, মদ্য ইত্যাদি (আলমগীরী ২য় খণ্ড)