সংজ্ঞা ও পরিচিতি
‘কযাফ’ (এ) শব্দের আভিধানিক অর্থ নিক্ষেপ করা। আর শরী’য়তের পরিভাষায় এর অর্থ হবে, মুহসিন তথা কোন সৎপুরুষ বা কোন সতী নারীর প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যিনার অপবাদ দেয়া। এরূপ অপবাদ দেওয়া কবীরা গুনাহ।
(শামী, ৪র্থ খণ্ড) হিদায়া গ্রন্থের প্রান্তটি টিকায় অনুরূপ উল্লেখ করা হয়েছে:
القذف في اللغة الرمي وفى الشرع نسبة من إحصن إلى الزناء
صريحا أو دلالة
প্রত্যক্ষ অপবাদ যেমন-কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির সন্তান বলে আখ্যায়িত করা। এইরূপ অপবাদ আরোপকারী ব্যক্তিকে তার দাবির সমর্থনে অবশ্যই চারজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী উপস্থিত করতে হবে। অন্যথায় তাকে মিথ্যা অপবাদের দায়ে (হদ্দে কাযাফ) হিসেবে ৮০টি বেত্রাঘাতের দণ্ড প্রদান করা হবে। (শামী ও হিদায়া)
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন: وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَاجْلِدُوهُمْ
تمنين جلدة ولا تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً اَبَدًا وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَسِقُونَ .
যারা সতী-সাধবী নারীর প্রতি যিনার অপবাদ আরোপ করে এরপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনা তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনো তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না এবং তারাই তো ফাসিক। (সূরা নূর: ৪)
হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে:
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا نَزَلَ عُذْرِي قَامَ النَّبِيُّ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَذَكَرَ ذلِكَ وَتَلَا تَعْنِ الْقُرْآنَ فَلَمَّا نَزَلَ
مِنَ الْمِنْبَرِ أَمَرَ بِالرَّجُلَيْنِ وَالْمَرْأَةِ فَضَرَبُوا حَدَّثَهُمْ . হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা) বলেন, আমার পবিত্রতা বর্ণনা সম্বলিত আয়াত যখন নাযিল হয়, তখন নবী করীম (সা) মিম্বারে দাঁড়ায়ে এ সম্পর্কে আলোচনা করেন এরপর পবিত্র কুরআনের আয়াত পাঠ করেন। তারপর মিম্বার থেকে অবতরণ করে দু’জন পুরুষ ও একজন মহিলা সম্পর্কে শাস্তির নির্দেশ দেন তখন লোকেরা তাদের উপর হদ্দ কার্যকর করে দেন। (আবূ দাউদ, কিতাবুল হুদুদ)
উল্লেখ্য যে, অপবাদদাতা পুরুষ হোক কিংবা নারী তারা যদি উপযুক্ত সাক্ষী প্রমাণ দ্বারা যিনা প্রমাণ করতে না পারে তবে তাদের উপর দণ্ড প্রয়োগ করা হবে। এক্ষেত্রে নারী পুরুষে কোন পার্থক্য করা হবে না।