বেহেশত ফার্সী শব্দ, আরবীতে একে জান্নাত বলা হয়। অর্থ সুখের ধাম। বেহেশত সম্বন্ধে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন ধারণা-বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে।
জান্নাত শব্দের শাব্দিক অর্থ উদ্যান। ইসলামের পরিভাষায়, এ জগতে মানুষের কৃত নেক কাজের বিনিময়ে পরকালে আল্লাহ যে সুখময় স্থান তাকে দান করবেন তাই জান্নাত বা বেহেশত। পবিত্র কোরআনে বেহেশত বা জান্নাত সম্বন্ধে যেসব বর্ণনা রয়েছে, তন্মধ্যে একটি কথা সাধারণ- মনোরম উদ্যানসমূহ, যার নিম্নদেশ দিয়ে নহর সব প্রবাহিত রয়েছে। কোরআনের অনেক আয়াতেই আল্লাহ তাআলা জান্নাতের এরূপ সাধারণ বর্ণনা দিয়েছেন।
বেহেশতে রয়েছে নানা প্রকার ফল যেমন আঙ্গুর, খেজুর ও দাড়িম্ব। বেহেশতের অপর একটি উপকরণ সমবয়স্ক যুবতী সঙ্গী। যারা পানপাত্র নিয়ে বেহেশতীদের মাঝে ঘুরে বেড়াবে, এ থেকে পান করলে শিরঃপীড়া ও চৈতন্য লোপ পাবে না। সারকথা, মানুষ সুখের উপায়-উপকরণ বলতে যা কিছু ভাবতে পারে তা সবই বেহেশতে বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু বেহেশত এমন এক জগত, জড়জগতের সাথে যার কোন তুলনা চলে না। সেখানকার দেহের ও আত্মার তৃপ্তি হবে পার্থিব জগতের তৃপ্তি হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কি সে তৃপ্তি তা কেউ জানে না। তবে সবচেয়ে বড় তৃপ্তির কারণ হবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সাক্ষাৎকার। এটাই হবে মানুষের পক্ষে অতি উত্তম আনন্দ। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, হযরত নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন, জান্নাতের একখন্ড ছড়ি রাখার পরিমাণ স্থান পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যা আছে তার সব কিছু হতে উত্তম।
অন্য এক হাদীসে হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন, জান্নাতে প্রবেশকারী আমোদ-প্রমোদে থাকবে। তার কোন কিছুর অভাব হবে না। তার পরিহিত বস্ত্রাদি হবে সুরমাযুক্ত। একজন মানুষ ৩০ কি ৩৩ বছর বয়সী যুবক হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। হযরত হাকীম (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন, জান্নাতে পানি, মধু, দুগ্ধ এবং
মদের সমুদ্র আছে।
বেহেস্ত আটটি : ১। জান্নাতুল খোলদ, ২। দারুস সালাম, ৩। দারুল কারার, ৪। জান্নাতু আদন, ৫। জান্নাতুল মাওয়া, ৬। জান্নাতুন নায়ীম, ৭। জান্নাতু ইল্লিয়্যীন, ৮। জান্নাতুল ফেরদাউস।